গল্প_অবহেলিত বয়ফ্রেন্ড
পর্ব_০২
লেখক_Ariyan_Ripon
রাবেয়ার এমন ব্যাবহার গুলো সুজনকে ভেতর থেকে শেষ করে দিচ্ছি..
পরদিন
সুজনঃ এই তুমি আমার নাম্বার ব্লাক লিস্টে দিয়ে রাখছো কেন??
রাবেয়াঃতোমার অই আজাইরা প্যানপ্যানানি আমার একদম ভালো লাগে না..তাই
সুজনঃকি আমি প্যানপ্যান করি??
রাবেয়াঃহুম কর..
সুজনঃআচ্ছা যাও ক্লাসে যাও এখন থেকে আর প্যানপ্যানানি করবো না..
রাবেয়া ক্লাসে চলে গেলো..সুজন ভাবলো সে আর এই জীবন রাখবে না..কলেজ থেকে বের হয়ে গেলো..
মেইন রাস্তায় চলে গেলো..আত্নহুতি দেবার জন্য..
মাত্র পা বাড়িয়েছে তখন সুজনের পুরোনো দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেলো
রাবেয়া একদিন তাকে বলেছিলো সুজনকে ছাড়া নাকি রাবেয়া বেচে থাকতে পাড়বে না..
হয়তো রাবেয়া কিছু নিয়ে খুব ডিস্টার্ব আছে
সময় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে.।তাই সুজন ফিরে এলো..
দিনগুলো কাটতে লাগলো.
১ মাস চলে গেছে গত একমাসে এমন কোনো দিন নেই যে রাতে সুজনের কান্না ছাড়া কেটেছে,,প্রতিরাতে সুজনকে কান্না করতে হয়েছে,,কিন্তু তবুও সুজন এই আশা নিয়ে বসে আছে রাবেয়া একদিন বুঝতে পাড়বে,,আর তাদেরর সম্পর্ক আবার আগের মত হয়ে যাবে..
ধরতে গেলে এখন রাবেয়া সুজনের সাথে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে,,সুজন যদি না যায় রাবেয়া নিজে থেকে আসে না কথা বলার জন্য..একটু খোজ খবর নেওয়ার কোনো নাম তো নেই..সুজন নিজে থেকে কথা বলতেও গেলেও রাবেয়া এড়িয়ে যায়..তেমন কথা বলে না সুজনের সাথে..
ক্যম্পাসে রাবেয়া আর সুমি বসে আছে..
সুমির মন খারাপ সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে..
রাবেয়াঃকিরে তোকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো কারণে তোর মন খারাপ??
সুমিঃ হ্যারে আসলে ওর সাথে না কিছুদিন হলো আমার কথা হয়না..
রাবেয়াঃকেনো কি হয়েছে?
সুমিঃ আমি জানি না রে আমার সাথে কেমন জানি ব্যাবহার করে সব সময় আমাকে এড়িয়ে চলে..
রাবেয়াঃ তো তুই এখনো ওর কাছে পড়ে আছিস কেনো??বেড়িয়ে আয় এমন সম্পর্ক থেকে.?
সুমিঃ আচ্ছা তুই আমাকে যে কথাটা বললি মানে সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসতে যদি সুজন ভাইয়া তোর কাছ থেকে চলে যায়??
রাবেয়াঃকেনো সুজন কেনো যাবে??
সুমিঃকারণ আমার বয়ফ্রেন্ড আমার সাথে যেমন বিহেভ করে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি সুজন ভাইয়ার সাথে করছিস..আচ্ছা সুজন ভাইয়া যদি তোকে ছেড়ে চলে যায় থাকতে পাড়বি??
রাবেয়াঃ থাকতে কেনো পাড়বো না,,সুজন আমার জীবনে কি যে ওকে ছাড়া থাকতে পাড়বো না..আর শুন আমি যদি সুজনকে মেরেও ফেলি তবুও সুজন আমাকে ছেড়ে যাবে না,,যদি যাবার হতো অনেক আগেই চলে যেতো,,কিন্তু সেটা তো যায়নি তাই কোনো দিন যাবে না
সুমিঃভুল বললি রাবেয়া একদম ভুল বললি
কারণ তোর কাছ থেকে সুজন ভাইয়া যে কষ্ট গুলো পাচ্ছে সেগুলো সুজন ভাইয়াকে কষ্ট দিচ্ছে ঠিক কিন্তু অন্যদিকে সুজন ভাইয়াকে একা বাচতে শিখিয়ে দিচ্ছে,,এমন একটা সময় আসবে দেখে নিস
রাবেয়াঃধুর ভালো লাগে না,,তোর মন খারাপ কেনো আমি সেটা জানতে চেয়েছিলাম আর তুই আমাকে দেবদাসের কথা শুনাতে শুরু করলি?এই বলে রাবেয়া উঠে চলে যেতে লাগলো
সুমিঃরাগ করে উঠে যাচ্ছিস যা,তবে এই কথা শুনে রাখ দাত থাকতে দাতের মর্ম দিতে হয়..
রাবেয়াঃ চলে গেলো..
সুমি হাসছে,সুমি খুব ভালো করেই জানে কাছের মানুষের থেকে পাওয়া কষ্টের থেকে বেশি কোনো কষ্ট নেই
সুজন এখন বাসা থেকে তেমন বের হয়না..
বের হলে সুজনের শুধু আগেকার কথা মনে পড়ে যায়..
আগে প্রায় প্রতিদিন রাবেয়াকে নিয়ে ঘুরতে যেতো
অনেক দুষ্টুমি করতো।রাবেয়া হয়তো সেই দিনগুলো ভুলে গেছে কিন্তু সুজন কিছুতেই সেই দিন গুলো ভুলতে পারে না,পারে না রাবেয়ার মায়ায় ভরা মুখ ভুলে থাকতে সুজন প্রতিদিন একবার হলেও যায় রাবেয়ার সাথে কথা বলতে,,রাবেয়ার ভালো লাগলে কথা বলে,,আর ভালো না লাগলে কথা বলে না,,এই নিয়ে সুজনের এখন আর কোনো অভিযোগ নেই,,
আগে খারাপ লাগতো কিন্তু এখন সুজন নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখে গেছে,আগে একটু
কিছু হলেই রাবেয়ার সামনে কান্না করে দিতো,,এখনো কাদে কিন্তু সেটা আড়ালে,,
দেখতে দেখতে আরো ২ মাস কেটে গেলো..
মোট ৩ মাস ধরে সুজন রাবেয়ার এই রকম আচরণ গুলো সহ্য করে আসছে...ভেতর থেকে অনেক শক্ত হয়ে গেছে সুজন,,
কিন্তু রাবেয়া যত দিন যাচ্ছিলো সুজনের সাথে খারাপ ব্যাবহারের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছিলো..
হঠাৎ করেই সুজন প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে.
৩ দিন যাবত কলেজে যায় না..
এই ৩ দিনে রাবেয়া একবারো সুজনের কোনো খোজ খবর নেইনি..
সুজন একটু সুস্থবোধ করতেই রাবেয়াকে ফোন দিলো।।
আমিঃ হ্যালো রাবেয়া কেমন আছ(কাপা কাপা কন্ঠে)
রাবেয়াঃহুম আমি ভালো আছি,,তুমি কেমন আছ??
আমিঃ আমি ভালো নেই খুব অসুস্থ আছি,,তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে একবার আমার বাসায় আসবে??
রাবেয়াঃপাগল নাকি মাথা খারাপ আমি যাবো তোমার বাসায়??
সুজনঃহ্যা এর আগে তো অনেকবার এসেছ?
রাবেয়াঃতখন আমি ছোট ছিলাম,,এখন বড় হয়ে গেছি.?
সুজনঃআমার না খুব খারাপ লাগছে..
রাবেয়াঃখারাপ লাগছে তো ডাক্তারকে বলো না,,সে তোমার ভালো লাগার পথ বলতে পাড়বে আমি তো বলতে পাড়বো না,,যত্তসব এই বলে কল কেটে দিলো
সুজন এখন আর কান্না করে না,,পুরোনো কথা মনে পড়ে আর হাসি পায় সুজনের..
আগে এই রাবেয়া হ্যা এই রাবেয়া সুজনের সামান্যতম অসুখ হলে ফোনের উপর ফোন তো করতো সাথে বাসায় চলে আসতো..
যতদিন পর্যন্ত না সুজন সুস্থ হতো রাবেয়া ঠিকমত নাওয়া খাওয়া করতে পারতো না..আর এখন সেই রাবেয়ার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সুজন এতো চেঞ্জ কি করে হতে পারে..আবার আমার খারাপ লাগার কথা শুনে বলে ডাক্তার দেখালে নাকি ভালো লাগার পথ বলে দিবে,,কিন্তু আমার খারাপ লাগার কারণ রাবেয়া সেটা একবারো বুঝতে পাড়লো না,,
সুজন এই কথাগুলো ভাবছে আর মিটিমিটি হাসছে,,
সুস্থ হতে আরো ২দিন লাগলো.?কিন্তু এই দুদিনে রাবেয়া একবারো ফোন দেয়নি..
সুস্থ হয়ে সুজন কলেজে যাচ্ছে,,
সুজন যে রাস্তা দিয়ে কলেজে যায় সেই রাস্তা দিয়ে রাবেয়াও কলেজে যায়,,তাই সুজন ভাবলো রাবেয়াকে একটা ফোন করে রাবেয়ার সাথে কলেজে গেলে ব্যাপারটা বেশ ভালো হয়
সুজন রাবেয়াকে কল করলো...
রাবেয়াঃহ্যালো এখন আবার কেনো ফোন দিছ??
সুজনঃতুমি এখন কোথায়??
রাবেয়াঃআমি বাসায় আছি,,
সুজনঃতাহলে একটু তাড়াতাড়ি আসো না দুজন একসাথে কলেজে যাবো..
রাবেয়াঃএই সুজন শুনো আমরা এখন আর ছোট নেই যে একসাথে কলেজে যেতে হবে।
সুজনঃছোট নয়তো কি হয়েছে একসাথে কি শুধু ছোটরাই কলেজে যায় নাকি??
রাবেয়াঃহ্যা একসাথে শুধু ছোটরাই কলেজে যায়
সুজনঃআচ্ছা রাখছি বাই..কল কেটে দিয়ে সুজন একাই কলেজে চলে গেলো.ক্লাসে না গিয়ে সুজন ক্যাম্পাসে বসে রইলো..রাবেয়া কখন আসবে সেই অপেক্ষাতে..
কিছুক্ষণ পর রাবেয়া আসলো..রাবেয়া একা না সাথে নাজমুল ও ছিলো..
সুজন আর বসে না থেকে রাবেয়ার কাছে চলে গেলো..
কি ব্যাপার রাবেয়া তখন তো আমাকে বলেছিলো যে তুমি বড় হয়ে গেছ একা আসতে পাড়বা,,কিন্তু এখন নাজমুলের সাথে আসলে কেনো??
রাবেয়া কোনো উত্তর দিলো না,,
সুজন আবার বললো আসল ব্যাপার হলো তুমি আমার সাথে আসবে না তারজন্য তখন অতগুলো কথা বলছিলে??
রাবেয়াঃ এই তো ঠিক ধরেছো..বুঝতেই যখন পারো তোমাকে আমার সহ্য হয়না তারপরেও কেনো আমার পিছনে লেগে আছ বলো না,,আমাকে কি একটু শান্তিতে থাকতে দিবে না নাকি..গত দুই বছর ধরে আমাকে জ্বালিয়ে যাচ্ছ..
সুজনঃকি আমি তোমাকে জ্বালাচ্ছি
রাবেয়াঃহ্যা অনেক জ্বালিয়েছ দয়া করে এইবার আমাকে মুক্তি যাও এই জ্বালাতন থেকে,,আমি আর সহ্য করতে পাড়ছি না
রাবেয়ার কথা শুনে সুজনের এতো কষ্ট হচ্ছে যেটা বলে বোঝানো যাবে না..
সুজনঃআচ্ছা আর কখনো তোমাকে জ্বালাবো না,
ভালো থেকো তুমি
রাবেয়াঃ আরে বড় বড় কথা বলে যাচ্ছ কেনো সেই তো কিচ্ছুক্ষণ পর এসে বলবে তোমার কিছু ভালো লাগছে না,,তোমার বাহানা খুব ভালোই জানা আছে।
আরে যাও যাও এতো বড় বড় কথা না বলে কাজে করে দেখাও..আর ডিস্টার্ব করবো না,,এটা তো এর আগেও অনেকবার বলেছ,,কই সত্যি হয়েছে সেটা?আবার তো কিচ্ছুক্ষণ পর এসে বলো তোমার নাকি কিছু ভালো লাগছে.।
সুজন একটু দূরে দাঁড়িয়ে রাবেয়ার কথা গুলো শুনছিলো আর নিরবে চোখের পানি ফেলছিলো.
চুপচাপ বাসায় চলে গেলো..আজ আম্মুর চোখে ধরা পড়েই গেলো..
আম্মুঃ সুজন তুই কাঁদছিস কেনো??
সুজনঃকই আম্মু আমি কাঁদছি নাতো??
আম্মুঃআর মিথ্যা বলবি না,,বল কি হয়েছে??
সুজন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না বাচ্চা ছেলেদের মত সব কিছু বলে দিলো আম্মুকে..
আম্মুঃথাক বাবা কান্না করতে হবে না,,সব ঠিক হয়ে যাবে..
সুজনঃআম্মু ও চাইনা আমি আর ওর সামনে যায়,,আম্মু আমি এই শহরে থাকলে আমার পড়ালেখা তো হবেই না,আর আমিও শেষ হয়ে যাবো..
আম্মু তুমি প্লিজ আমাকে নানু বাসায় পাঠিয়ে দাও..
আম্মুঃসেটা কি করে হয় বড় ছেলেটা থাকে দেশের বাইরে থাকে..তোকে নিয়ে আমরা দুজন বেচে আছি এখন তুইও যদি দূরে থাকিস আমরা থাকবো কি নিয়ে..
সুজনঃআম্মু নানু বাসায় থাকলে তো তাও জানতে পাড়বে তোমার ছেলেটা বেচে আছে,,কিন্তু যদি তা না যেতে দাও সারা জীবন ছেলে হারাবার শোক বহন করতে হবে আম্মু পারবে সেটা মেনে নিতে
আম্মুঃচুপ একদম চুপ তুই যেটা বলছিস সেটাই করবো..তবে আমি আজ বলছি যে মেয়ের জন্য তুই আজ কাঁদছিস অই মেয়েটা একদিন তোর থেকে বেশি কাঁদবে
সুজনঃআম্মু এমন দোয়া করো না,,ওর জন্য এমন দোয়া করো যেনো ও খুব ভালো থাকে খুব সুখে থাকে..
আম্মুঃপারবো না আমি,,আর আমি এটাও পারবো না অই মেয়েকে কোনো দিন ক্ষমা করতে..তা তুই কবে যাবি
সুজনঃআম্মু আমি আজই চলে যেতে যায়।
আম্মু;আজি চলে যাবি?
সুজনঃহুম আম্মু এই শহরটা আমাকে শেষ করে দিচ্ছে..
আম্মুঃআচ্ছা তাহলে আমি তোর নানু বাসায় জানিয়ে দিচ্ছি আর চল তোর কি কি লাগবে সব গুছিয়ে দিচ্ছি
আম্মু তার আগে আমাকে একটা কথা দিতে হবে..
আম্মুঃকি কথা??
সুজনঃআমি কোথায় আছি যদি কেও কোনো দিন জিজ্ঞাস করে কিচ্ছু বলবে না এটা বলে দিলাম।।
আম্মুঃসেটা তুই না বললেও আমি কাওকে কিছু বলতাম না..
সব কিছু গোছানো শেষ..
আজ রাতেই সুজন কাতলা গাড়ী ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবে..
রাবেয়াকে আর কখনো বিরক্ত করবে না,,
আম্মু আব্বু সুজনকে গাড়িতে উঠিয়ে দিলো..
সুজন চললো তার নানু বাড়ির উদেশ্যে..??
সেদিন সকালের পর রাবেয়ার ফোন আর কোনো কল আসেনি
রাবেয়ার তো দারুণ খুশি..খুব খুশি মনে ঘুমিয়ে পড়লো..
****
****
পরদিন সকালে রাবেয়া ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিলো নাহ কোনো মেজেস বা কল আসেনি..
খুশি মনে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে দেয়ে কলেজে চলে গেলো..
ক্লাস শুরু হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সুজনের কোনো নাম নেই..রাবেয়া খুশির উপর ডাবল খুশি..
সুমিঃকিরে রাবেয়া তোকে আজ একটু বেশি খুশি দেখাচ্ছে কারণ টা কি??
রাবেয়াঃআরে খুশি হবো না?কালকের সেই ঘটনার পর থেকে অই তার ছেঁড়াটা..আর দেখ আজকে কলেজেও আসেনি খুব ভালো লাগছে আমার
সুমিঃ তুই আজ যে কারণে খুশি হচ্ছিস দেখবি এই কারণে তোকে একদিন কাঁদতে হবে..
রাবেয়াঃআমি রাবেয়া কাঁদবো তাও আবার একটা তার ছেঁড়ার জন্য?কোনো দিনও কাঁদবো না আমি
সুমিঃসেটা সময় বলে দিবে ক্লাস শুরু হয়ে যাবে চল।ক্লাসে চল..
রাবেয়া ক্লাসে চলে গেলো
সুখিঃসুজন এই সুজন আর কত ঘুমাবি উঠ এইবার.
সুজনঃআরে যা না ঘুমাতে দে আমার ভালো লাগছে না,,।
সুখিঃবেলা অনেক হয়ে গেছে তুই না আজ কলেজে ভর্তি হতে যাবি?
সুজনঃ হুম যাবো তো কি হয়ছে
সুখিঃ আরে বেলা বাজে ৮:৩৩মিনিট কলেজে যেতে যেতে ৯টা বেজে যাবে ভর্তি হবি কতক্ষণে..
সুজন লাফ দিয়ে উঠলো
চোখ গুলো এখনো লাল বর্ণ ধারণ করে আছে..
সুখিঃএই তুই কি কেঁদেছিস নাকি।
আমিঃ নাহ আমি কাঁদতে যাবো কোন দুঃখে।
সুখিঃতোর চোখ দেখে মনে হচ্ছে তুই কেঁদেছিস।
আমিঃ আরে নাহ কাদিনি..আসলে রাত জেগে এসেছি তো তাই এমন হয়েছে মনে হয়..
সুখিঃহুম হবে হয়তো,,যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে কলেজে যাবো...
অহ সুখি কে সেটাই বলা হয়নি..
সুখি হলো সুজনের বড় মামার ছোট মেয়ে..
সুজন আর সুখি সেইম ইয়ারে পড়ে
চেহারা রাবেয়ার থেকে কোনো অংশে কম নয়..
সুজন উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো,,সুখি রেডি হয়েই আছে..অনেকগুলো ব্যাগ নিয়ে এসেছে..
সুজন ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে সুখির সাথে বেরিয়ে গেলো..
যাবার আগে অবশ্য নানা নানি মামা সবাই খাওয়ার জন্য বলেছিলো কিন্তু সুজন কিছুই খেলো না..
কলেজে ভর্তি হয়ে বাসায় চলে আসলো..সুখি ক্লাস করবে তাই সুখিকে রেখেই আসতে হয়েছে
এখানে আসার পর থেকে রাবেয়ার কথা খুব মনে পড়ছে মন চাচ্ছে একটা কল দেই,,কিন্তু নাহ সেটা করবো না,,অনেক কষ্ট পেয়েছি আর না আমাকে একজন মানুষ হিসেবেও দেখতো না..
সুজন নিজেকে শক্ত করে নিলো..
নানু বাসায় এসেছে ৭দিন
কলেজ থেকে ফিরে ঘুমিয়ে আছে তখন মিরাজের গলা শুনতে পেলো কিন্তু এখন এসময় মিরাজ আসবে কি করে??
মিরাজঃকিরে হারামি আমাকে একা রেখে চলে আসলি।
আমিঃকি করবো বল অই শহরটা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিলো।
মিরাজঃআমি কিছুটা জানি কিন্তু পুরোটুকু জানিনা,,জানতেও চাই না
সুজনঃতা আমি এখানে আছি তুই কি করে জানলি?
মিরাজঃআরে তোর কোনো খোজ খবর পাচ্ছিলাম না,,তাই তোর বাসায় গেলাম কিন্তু আন্টি আমাকে কিছু বললো না,,
একদিন মৌসুমিকে তোর কথা বলতেই বললো তোকে নাকি রোজ কলেজে দেখে ব্যাপার টা আমার বিশ্বাস হলো না,,তাই ভিডিও কল করতে বললাম আর সিউর হলাম দেবদাস বাবু এখানে এসে বাসা বেধেছে
তাই আমিও চলে আসলাম..
সুজনঃমানে বুঝতে পাড়লাম না তুই চলে আসছিস মানে?
মিরাজঃআরে দোস্ত আমার মৌসুমিকে ছাড়া ভালো লাগে না,,আর তোকে ছাড়াও না দুজন যেহেতু এখানেই আছে তাই আমিও চলে আসলাম এখন চুটিয়ে প্রেম করবো আর পড়ালেখা দোস্ত আমি এখানে আছি এটা আর কেও জানেনা তো?
মিরাজঃনাহ কাওকে জানাইনি
বেস্ট ফ্রেন্ডকে পেয়ে আর পুরোনো সৃতিগুলোকে ভুলে বেশ ভালোই দিন কাটতে লাগলো....?
অন্যদিকে রাবেয়া
১৪ দিন হলো সুজনের সাথে কোনো কথা হয়না..
কলেজে ক্যম্পাসে বসে আছে একাই বসে আছে এখন রাবেয়ার কেনো জানিনা কাওকেই ভালো লাগে না সবাইকে অসহ্য লাগে,,আর সবার মাঝে একজনকে খুঁজে..বারবার ফোন দিকে তাকায় কলেজের গেইটের দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু রাবেয়া যাকে খুঁজছে তাকে পাচ্ছে না,
সুজনকে যারা চিনে রাবেয়া তাদের জিজ্ঞাস করছে
সুজনের আরেক বন্ধু ছিলো আলমগীর।
আলমগীর ক্লাসে যাচ্ছিলো তখন পেছন থেকে রাবেয়া ডাক দিলো
রাবেয়াঃএই আলমগীর ভাইয়া একটু দাড়াও
আলমগীরঃহ্যা বলো কি??
রাবেয়াঃআজ কিছুদিন হলো সুজনের কোনো খোজ খবর নেই,ফোন দেয়না কলেজে আসে না দেখাও করে না
আলমগীরঃহ্যা আমিও সুজনকে খুজছি কিন্তু পায়নি..
ফোন করেছিলাম কিন্তু কিছুই বলে নাই।
রাবেয়ার মন খুব খারাপ হয়ে গেলো..
আজ ২৭ দিন হলো সুজনের সাথে কথা নেই দেখা নেই..
প্রথম কিছুদিন রাবেয়ার বেশ ভালো কাটলেও আস্তে আস্তে সুজনের শুন্যতা ভর করছে।।
এতোদিন রাবেয়া নিজের ইগোর কারণে ফোন দেয় নি
২৭ দিনেরর দিন রাবেয়া আর থাকতে পাড়ছিলো না,,সে তার ভুল গুলো একটু একটু করে বুঝতে শুরু করছে
সুজনের নাম্বারে কল দিলো কিন্তু যেটা শুনতে পেলো রাবেয়ার বুকের মধ্যে ধুক করে উঠলো..
আপনার কলটি এই মুহুর্তে ওয়েটিং এ আছে অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর ফোন করুন ধন্যবাদ
১০ মিনিট একই কথা বলছ
হাজারো দুশ্চিন্তা ভর করছে
কারণ গত দুই বছরে কোনো দিন সুজনের ফোন ওয়েটিং পায়নি আর আজ??????বুকের ভেতর চিনচিন ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে।
চলবে তো........?
0 Comments