Bangla Story (সুখের সন্ধানে - পর্ব-৩) Bangla Golpo

Are you searching love story in Bangla language you will find here many types of Bangla story like a romantic love story, cute love story, heart touching love story, Islamic love story, Bangla golpo, story, real love story, new love story, valobasar golpo, premer golpo, Bangla love story, I hope you are like our collections if you like our collection please connect with us.

Bangla Story (সুখের সন্ধানে - পর্ব-৩) Bangla Golpo, Bangla story like a romantic love story, cute love story, heart touching love story, Islamic love story, Bangla golpo, story, real love story, new love story,
(সুখের সন্ধানে - পর্ব-৩)

সুখের সন্ধানে
Tahmi Chowdhury
পর্ব-৩




__"জাযাকাল্লাহ খাইরান আপি"
ছোট মোহাম্মদ বোন ও মাকে জড়িয়ে ধরে প্রাণবন্ত হাসি হাসলো……
৪ দিন পর____
-দোহাই লাগে আব্বু আম্মুকে মেরো না আব্বু প্লিজ আব্বু আম্মুকে ছেড়ে দাও……
__এই মোহাম্মদ কি হয়েছে তর,,,কে মারছে আম্মুকে? উঠ উঠ!
নুসরাতের আরেক ভাই আমিনুল মোহাম্মদকে ডেকেই যাচ্ছে। কি জানি আবোলতাবোল বকছে ঘুমের মধ্যে……
আমিনুলঃ ভাই উঠ! কি হয়েছে তর?
মোহাম্মদ ধরফড়িয়ে উঠে বসলো! পুরো শরীর তার ঘামে ভিজে গেছে……
আমিনুলঃ কি হয়েছে ভাই?
কোন খারাপ স্বপ্ন দেখেছিস?
বড় ভাই আমিনুলকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো মোহাম্মদ____
-কান্না করছিস কেন,,,এই মোহাম্মদ বল কি হয়েছে তর?
মোহাম্মদ- ভাইয়া আমি না স্বপ্নে দেখেছি আব্বু আম্মুকে ভীষণ মারছে! ভাইয়া আব্বু কি আম্মুকে মারছে! আমার না খুব ভয় লাগছে।
ভাইয়া চলো না বাড়িতে যাই?
ছোট ভাইয়ের কথায় আমিনুলের মুখটাও ফ্যাকাশে হয়ে গেলো,,,,
মন থেকে যতইই ভালো হোন না কেন নুসরাতদের বাবা(আশরাফ মাহমুদ) খুবই রাগী লোক তিনি,,,,
একটু হেরফের হলেই নুসরাতের আম্মুকে সব অত্যাচার সহ্য করতে হয়……
মোহাম্মদ- ভাইয়া চলো না……
ফুঁপিয়ে কান্না করছে ছোট মোহাম্মদ……
আমিনুল- আরে পাগল ভাই আমার! কিচ্ছু হয় নি আব্বু আম্মুকে একদম মারছে না,,,
এটা স্বপ্ন। আর স্বপ্নকে এইভাবে সত্য মনে করতে নাই। ঠিক আছে,,,চল আয় আবার ঘুমিয়ে পড়!
মোহাম্মদ- ভাই সত্যি বলছো তো?
__হুম চল আয়!
মোহাম্মদকে শুইয়ে দিয়ে চুপিচুপি উঠে গেলো আমিনুল।
চুপিচাপি উঠে মাদ্রাসার আরেক স্টুডেন্ট কে ডাকতে লাগলো……
-শিহাব এই শিহাব!
-কে কে?
ধরফড়িয়ে উঠে বসলো শিহাব……
আমিনুল- ভাই তোর ফোনটা একটু দে না! আম্মুকে একটা কল দিবো?
মোবাইলের দিকে তাকিয়ে শিহাব বলল,,,
__রাত ২ টা বাজে ভাই! এতো রাত কেন হয়তো তোর আম্মু এতোক্ষণে ঘুমিয়ে গেছে।
কাল সকালে না হয় কল দিবি।
আমিনুল কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,,,
__না ভাই আমার মনটা মানছে না,, আম্মুর সাথে কথা বলতে হবে,,,প্লিজ ভাই!
-আচ্ছা আচ্ছা এই নে!
মোবাইলটা হাতে নিয়ে আড়ালে চলে গেলো আমিনুল,,,
কাপা কাপা হাতে বোনের নাম্বারটিতে ডায়াল করলো,,
ওপাশে রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না…
এতোক্ষণে আমিনুল ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে…
তৃতীয়বার কল দিতেই কলটা রিসিভ হলো,,
আমিনুলঃ আসসালামু আলাইকুম! আপু আম্মু কোথায়?
ওপাশে কোন সাড়াশব্দ মিললো না……
__হ্যালো আপু শুনতে পারছ! আম্মু কোথায় আপু?
ভাইয়ের কথায় নুসরাত ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করলো,,,
আমিনুলঃআব্বু আবার আম্মুর গায়ে হাত তুলছে তাই না?
ছোট্ট করে নুসরাত উত্তর দিলো,,
__হুম?
বোনের উত্তরে বড়সড় নিশ্বাস নিলো আমিনুল,,,সাথে চোখ থেকে বেয়ে পড়া অশ্রুজলগুলাও নিরবে মুচলো……
__আলহামদুলিল্লাহ আ'লা ক্বুল্লি হাল আপু।
রাখছি,,,,,,
নিঃশব্দে কল কাটলো নুসরাত……
"হে আল্লাহ আমার বাবাকে তুমি উত্তম হেদায়েত দান করো মাবুদ"
এইভাবে আর কতো দিন আল্লাহ আমার মা এইসব সহ্য করবেন,,,,আমাদের জন্মের পর থেকে এই দৃশ্য দেখে আসছি,,,আর পারছি না নিতে আল্লাহ"
কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো নুসরাত!
তখনি নুসরাতের বোন মিলি মাকে নিয়ে রুমে ঢুকলো……
নুসরাত- মা তুমি ঠিক আছো তো মা!
মেয়ের প্রশ্নে ম্লাম হাসি হাসলেন শাহিনা বেগম……
মিলি- আপু ব্যথা সাড়ার মলমটা দে তো?
দু হাতে মুখ চেপ্র ড্রয়ার থেকে মালিশ এনে বোনের কাছে দিলো নুসরাত।
-মা তোমার অনেক কষ্ট হচ্ছে না গো! মা আমাদের একটা চাকরী হতে দাও! তোমাকে এই নরক থেকে বের করে নিয়ে যাব,,,আর কখনো বাবার মুখ দেখতে হবে না তোমায়!
ছোট মেয়ে মিলিকে এক ধমকে থামিয়ে দিলেন শাহিনা বেগম,,,
__চুপ বিয়াদব মেয়ে! এইসব কি বলছিস হ্যাঁ। তর বাবা আমাকে মারতেই পারে কারণ আমার উপর উনার হক আছে।
মিলি কান্নাজড়িত চোখে,,,
__তাই বলে মা এইভাবে! তুচ্ছ একটা কারণ নিয়ে।
আমি যতদূর জানি,,,হাদিস কোরআনের কোথাও স্ত্রীদের গায়ে এইভাবে বিনা ওজরে হাত তুলার অনুমতি নেই,,,,আর………
মিলি পুরো কথা শেষ করতে পারে নি নুসরাতে আব্বু দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন……
আশ্চর্য ব্যাপার হলো আশরাফ মাহমুদের চোখে পানি,,,,
নুসরাত আর মিলি নিরবে রুম ত্যাগ করলেন।
শাহিনা বেগম স্বামীর দিকে মায়ার দৃষ্টিতে একবার তাকালেন……
এই মানুষটাকে তিনি হারে হারে চিনেন,,,,যখন রাগ হয় তখন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না মানুষটার।
শাহিনা বেগমের পাশে এসে নিরবে দাড়ালেন আশরাফ সাহেব……
শাহিনা বেগমের চোখ দিয়ে তখন নিরবে জল ঝড়তে লাগলো…
বিছানা থেলে ব্যথানাশক মালিশটা হাতে তুলে শাহিনা বেগমের পাশে বসলেন আশরাফ সাহেব……
-আমাকে মাফ করে দাও!
কান্নাজড়িত কন্ঠে শাহিনা বেগমকে বললেন তিনি,,,
-আমার রাগের সময় কোন জ্ঞান থাকে না! অভাবের সংসার একটা আনতে আরেকটা ফুরিয়ে যায় তাই চিন্তায় অনেক সময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়,, আমি বুঝতে পারি না তখন আমার কি করা উচিত,,,বিশ্বাস করো আমি……
শাহিনা বেগম- আমি তো আপনাকে কিছু বলিনি যে মাফ চাইছেন হুম! আমি আপনার উপর রাগ ও করিনি।
কিন্তু একটা কথা কি জানেন,,
আপনার ঘরে আপনার হাত ধরে যেদিন প্রথম আসি সেইদিন কতো স্বপ্ন সাথে নিয়ে এসেছিলাম,,,
তখন মনে হতো আমার স্বপ্নগুলা কিন্তু একদম খুব বাজে ছিলো না,,,,
কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমার দেখা স্বপ্নগুলা খুব বাজে ছিলো,,,,
কল্পনার জগতে তখন শুধু সুখেরই সন্ধানে মেতে থাকতাম,,,,কিন্তু বাস্তব চিত্র তো ভিন্ন…………
আশরাফ সাহেবের মুখে কোন কথা নেই,,,,
কি বলবেন তিনি অপরাধী যে তিনিই,,, মাথা নিচু করে স্ত্রীর সামনে নিরবে বসে রইলেন আশরাফ সাহেব।
শাহিনা বেগম আবার বলতে শুরু করলেন,,,,
__আমাদের মেয়েরাও বড় হচ্ছে,,ওদের ও যেতে হবে ওদের ঠিকানায়।
আচ্ছা ওদের নতুন ঠিকানাটা আল্লাহ না করুক যদি আমার মতো হতভাগীর মতো হয়!
আমি মা হয়ে তা সহ্য করতে পারবো না,,,,
আশরাফ সাহেব- থামো মোহাম্মদের মা থামো! আমাকে মাফ করে দাও তুমি,,,অনেক অন্যায় করেছি আমি তোমার উপর!
আমি বাবা হয়েও আমার মেয়ের এইরকম হোক মানতে পারবো না! আসলে আমি বুঝতে পারিনি……
আমার সব জ্ঞান থাকা স্বত্বেও আমি গাফেল,,,,,,,
আমাকে মাফ করো তুমি!
স্ত্রীর হাত জড়িয়ে ধরে করজোড়ে ক্ষমা চাইতে লাগলেন আশরাফ সাহেব।
:
আম্মু আম্মু কোথায় তুমি,,,
শাহানারা বেগম- এইতো বাবা কি হলো তর?
__নাস্তা দাও তাড়াতাড়ি ৮ টা বেজে গেছে অফিসের লেট হচ্ছে তো?
- তুই ৫ মিনিট অপেক্ষা কর আমি এক্ষুণি নাস্তা আনছি।
- ভাইয়া আজ আমার কলেজে বড় একটা প্রোগ্রাম হচ্ছে আমাকে টাকা দিয়ে যাও।
ইমনের ছোট বোন মিম কথাগুলো বলছিলো ইমনকে…
-কতো চাই?
-এই ২০০০।
-হুম এই নে,,,,,
শাহানারা বেগম নাস্তা এনে টেবিল সাজালেন……
ইমন- মা তুমিও বসে পড়ো!
-না বাবা তুই খা,,আমি তর বোনদের খাইয়ে খাবো!
ইমন মুখে খাবার তুলতে তুলতে হঠাৎই নুসরাতের কথা মনে পড়ে……
কি ভেবে ঠোঁটেরর কোণে মুচকি হাসির রেখা মেলে ধরে ইমন……
ছেলের অদ্ভুত এই হাসি শাহানারা বেগমের চোখ এড়ায় নি……
শাহানারা বেগম- কি হলো রে
এইভাবে একা একা পাগলের মতো হাসছিস কেন?
মায়ের দিকে হাসিমাখা মুখ নিয়ে প্রশ্ন করে ইমন……
__আচ্ছা মা কালকের ওই বোরকাওয়ালী মেয়েটা যদি তোমার ছেলের বউ হয় কেমন হবে?
ছেলের কথায় শাহানারা বেগম অনেকটা বিস্মিত হলেন,,,যে ছেলে আধুনিকতা কেই বেশি প্রাধান্য দেয় সে ছেলেটার আজকালকার কথাবার্তায় তিনি অনেকটা বিমোহিত।
__আচ্ছা মা আমার অফিসের লেট আমি যাচ্ছি!
ছেলের কথায় কোন উত্তর দিলেন শাহানারা বেগম,,,
অজানা এক চিন্তায় ঘিরে ধরলো তাকে……
দরজার কাছে গিয়ে ইমন আবার পেছনে ফিরে ডাক দিলো মাকে……
__যাচ্ছি মা!
এতোক্ষণে হুশ এলো শাহানারা বেগমের,,,
ছেলের দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে জবাব দিলেন তিনি,,
-সাবধানে জাস!

Part 4

Post a Comment

0 Comments